অনলাইন ডেস্ক :মিয়ানমারের আর একজন নাগরিককেও বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বিষয়টি দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীসহ সব ধরণের বাহিনীকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত, আমরা একটাও মিয়ানমারের নাগরিককে বাংলাদেশে ঢুকতে দেবো না।’
আজ শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সিলেটের লাক্কাতুরা চা বাগানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চা শ্রমিকদের মতবিনিময় শেষে সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের ওখানে (মিয়ানমারে) সংঘাত হচ্ছে। সংঘাতটা তাদের দেশের বিভিন্ন স্বশস্ত্র গ্রুপের মধ্যে।’
সীমান্তে সতর্কতা বাড়ানোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা অসমর্থিত সূত্রে জেনেছি, সেখানে মিয়ানমার সেনাবাহিনী একটি প্রচারণা চালিয়েছে যে ওই এলাকায় যে সমস্ত লোকজন আছে তারা যেন সরে যায়। এ জন্য আমাদের ভয় হয়। ভয় হয় এজন্য, এখন তারা অত্যাচারিত হবে, সংঘাত বেশি হবে। তখন তারা আমাদের এ দিকে আসার চেষ্টা করবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘তবে শুনে আশ্বস্ত হচ্ছি, তারা আমাদের দিকে আসছে না অন্যদিকে যাচ্ছে। তবুও আমরা অসমর্থিত সূত্রে এ খবর জানার পর সঙ্গে সঙ্গে আমাদের বিভিন্ন বর্ডার ফোর্স, সব ধরণের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়েছি যে এডিশনাল প্রিপারেশন নেওয়ার জন্য। আমরা সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত যে আমরা একটাও মিয়ানমারের নাগরিককে বাংলাদেশে ঢুকতে দেব না। এটা আমরা মোটামুটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
বাংলাদেশ সীমান্তে মিয়ানমারের মর্টারশেল প্রবেশ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘তাদের যে বোম আমাদের এখানে এসেছে। গতকাল পর্যন্ত তথ্যমতে আমাদের এলাকায় এরা ঢুকেনি। দূর থেকে দেখা গেছে বলে আমাদের বর্ডার লাইনের এরা জানিয়েছে।’
এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাদের (মিয়ানমারের) রাষ্ট্রদূতকে ডেকে আমরা বলেছি। তারা বলেছে এটা বোম এসট্রে। তারা তাদের সরকারকে বলবে যাতে এ ধরণের দুর্ঘটনা আর না হয়।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চা শ্রমিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করার সন্তুষ্টির কথা জানিয়ে এ সময় তিনি বলেন, ‘আমরা খুবই আনন্দিত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া অত্যন্ত সুনজরে দেখছেন এবং আশ্বস্ত করেছেন।’
তিনি যুদ্ধপরবর্তী সময়ের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর পরই সিলেট সফরে আসেন। ওই সময় আমরা চা শ্রমিকদের সঙ্গে মিলে লাক্কাতুরা চা বাগানের সামনে বঙ্গবন্ধুর গাড়ি থামাই। এ সময় তিনি ধৈর্যের সঙ্গে যুদ্ধের সময় চা বাগানের মানুষের দুর্ভোগ, ক্ষতির কথা শুনেন। আর আজ লাক্কাতুরা চা বাগানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাদের বক্তব্য শুনলাম। তিনি সবসময় সাধারণ গরীব, দুঃখী মানুষের কথা ভাবেন।’
চা শ্রমিকদের জন্য শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা চালু হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি সেখানে শুক্রবার গিয়েছিলাম। সেখানে উপাচার্য আমাকে অঙ্গীকার করেছেন তারা এই চা শ্রমিকদের সন্তানদের উচ্চ শিক্ষার জন্য একটি বিশেষ কোটা বরাদ্দ করবেন। সুতরাং চা শ্রমিকরা যে দাবি জানিয়েছেন সেটা আমরা ইতোমধ্যে পূরণ শুরু হয়েছে, এটা সুখের বিষয়।’