নিজস্ব প্রতিবেদক: ফতুল্লার কুতুবপুর ইউনিয়নে ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং। হত্যা, মাদক ব্যবসা, ছিনতাই, চুরি, ইভটিজিংসহ অপরাধের প্রতিটি সেক্টরে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে তারা। ইউনিয়নের প্রতিটি পাড়া মহল্লাতেই এদের অবাধ বিচরণ৷ তথাকথিত কিছু রাজনৈতিক নেতা ও ‘বড় ভাই’ নামে পরিচিত ব্যক্তিরা স্বার্থ হাসিলে তাদের শেল্টার দেওয়ায় পিছু ফিরে তাকাতে হচ্ছে না এইসব চিহ্নিত অপরাধীদের। ফলে আতংকে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে এলাকাবাসীর।
স¤প্রতি কিশোর গ্যাংয়ের অসংখ্য অপকর্মের বিরুদ্ধে মুসলিমপাড়ায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সভার আয়োজন করেন। সেখানে জনসাধারণের মুখে কিশোর গ্যাংয়ের বর্বরতা, অত্যাচারের চিত্র উঠে আসে। একাধিক সূত্র জানায়, কুতুবপুরের মুসলিমপাড়া, চিতাশাল, ব্রাহ্মণগাঁও, উঁচাপাড়া, নয়ামাটি, শাহীবাজারে একাধিক কিশোর গ্যাংয়ের উপদ্রব বেড়েই চলেছে। ওই অঞ্চলের খলিলের ছেলে নিহাদের নেতৃত্বে বড় একটি গ্যাং গড়ে উঠেছে। এর সদস্য হিসেবে রয়েছে মিনারা বেগমের ছেলে ইলিয়াস (রাকিব হত্যা মামলায় অভিযুক্ত), কালাচাঁনের ছেলে মাসুদ, হেলালের ছেলে নাসিম, মিজানের ছেলে নাইম, আলেকের ছেলে ফারদিন, সাথীর ছেলে তানজিল, ইব্রাহিমের ছেলে ইমন, আশিক, রায়হান, সাকিব। এদের প্রত্যেকের হাতেই গিয়ার, চাপাতি, ছেন, ছুরি, রামদাসহ বিভিন্ন মারণাস্ত্র থাকে। এলাকায় মাদক ব্যবসা, ছিনতাই, রাহাজানি করতে অস্ত্রশস্ত্র সহকারে নিয়মিত মহড়াও চালাতে দেখা যায় তাদের। এলাকাবাসী জানায়, এদের অত্যাচারে এলাকার পরিবেশ ক্রমান্বয়ে বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। মাদকে সয়লাব হয়ে গেছে গোটা অঞ্চল। নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে খুনখারাপি করতেও দ্বিধা করে না তারা।
গ্যাংয়ের এইসব সদস্য প্রত্যেকেই মাদকাসক্ত৷ প্রকাশ্যেই বিভিন্ন স্থানে মাদক সেবন করতে দেখা যায় তাদের। সন্ধ্যার পরে তো বটেই, দিনদুপুরেও এদের ভয়ে অনেক নারী- বয়োবৃদ্ধেরা ঘর থেকে বের হতে সাহস পান না। ছিনতাই নিত্যনতুন ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে ওই অঞ্চলে। এছাড়া বাসাবাড়িতে ঢুকে চুরিও করে এই সিন্ডিকেট। মাদকের টাকা জোগাড় করতে আরো নানাবিধ অপকর্মে জড়াচ্ছে তারা। স¤প্রতি মুসলিমপাড়ায় এক তরুণীর মোবাইল ফোন প্রকাশ্যেই ছিনতাই করে নিহাদ বাহিনী৷ পরবর্তীতে ঘটনা জানাজানি হলে এলাকাবাসী তাদের ধাওয়া দেয়। এ ঘটনাট একদিন পর এলাকাবাসীর উদ্যোগে এক সভা থেকে চিহ্নিত এসব সন্ত্রাসীকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এলাকা ছাড়ার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। কিন্তু জনসাধারণের মতে, প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের জিরো টলারেন্স ব্যতীত কিশোর গ্যাং নির্মূল কষ্টসাধ্য। নয়তো কিশোর গ্যাংয়ের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব হয়ে পড়বে।