নিজস্ব প্রতিবেদক: ফতুল্লার আলীগঞ্জ-পাগলা এলাকায় নদী ও রাস্তা দখল করে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। স্থানীয় এক প্রভাবশালী শ্রমিক নেতার ছত্রছায়ায় থাকা একদল চাঁদাবাজ দীর্ঘদীন ধরে এ চাঁদা আদায় করে আসছে বলে অভিযোগ উঠে আসছে।
এদিকে দলের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রভাবশালী ঐ শ্রমিক নেতার চাঁদা আদায়ের কারনে ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছে ঢাকা-পাগলা-নারায়ণগঞ্জ সড়কে দিয়ে যাতায়াতরত হাজারো মানুষ। দীর্ঘদীন ধরে প্রভাবশালী ঐ শ্রমিক নেতার চাঁদা আদায়ের ঘটনা অনেকটা ওপেন সিক্রেট হলেও রহস্যজনক কারনে নীরব রয়েছে দায়িত্বশীল কতৃপক্ষ।
এছাড়াও, নারায়ণগঞ্জ-ফতুল্লা আসনের সাংসদ শামীম ওসমান জেলা প্রশাসকের কার্য্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ফতুল্লার আলীগঞ্জ-পাগলা এলাকায় নদী ও রাস্তা দখল করে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। ঐ সময় শামীম ওসমান প্রশ্ন রেখেছিলেন, এই চাঁদা আদায় করে কারা?
সরজমিনে দিয়ে দেখা যায়, দখলের কারণে স্থানীয় সাধারন মানুষের পাশাপাশি ব্যস্ততম ঐ সড়ক দিয়ে চলাচলরত হাজারো মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এছাড়াও পাগলায় সড়কে গড়ে উঠেছে অপরিকল্পিত ট্রাক স্ট্যান্ড। আর ফতুল্লা থেকে পাগলা পর্যন্ত নদীর পাড় দখল করে আদায় করা হচ্ছে মোটা অংকের চাঁদা। ফতুল্লায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কের দু’পাশে ফুটপাত দখল করে হকাররা তাদের ব্যবসা চালিয়ে আসছে। কোন ভাবেই থামছে না দখলের রাম রাজত্ব। দিনকে দিন অবৈধ ভাবে দখলবাজী যেনো পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলছে। পাগলার তালতলা, পাগলা বাজার, আলীগঞ্জ এলাকা থেকে শুরু করে ফতুল্লার পোষ্ট অফিস পর্যন্ত সড়কের দু’পাশে কোথাও অবৈধ ভাবে ট্রাকের ষ্ঠ্যান্ড, কোথাও ট্রাক বা অন্যান গাড়ি মেরামত করার জন্য গ্যারেজ স্থান তৈরী করেছে। আবার কোথাও ইট, বালু, পাথর দিয়ে রাস্তার দু’পাশ দখল করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ি তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। ঐ সড়ক দিয়ে চলাচলের জন্য বের হলেই সড়কের দু’পাশে তাকালে লক্ষ্য করা যায় এমন দৃশ্য । যা কিনা দীর্ঘদীন ধরেই পথচারি ও যাত্রীসহ জনসাধারনের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। ফতুল্লার ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের এই পুরাতন সড়কটিকে বলা হয় মুন্সিগঞ্জ, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের সেতু বন্ধন সড়ক। এই সড়কে প্রতিদিন পণ্য সরবরাহ থেকে শুরু করে যাত্রীবাহী বাস, বিসিক শিল্প নগরী পন্য সরবরাহ, অসংখ্য শিল্প কারখানা এমনকি মুন্সিগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জের সাধারন মানুষের অনন্ত গুরুত্বপূর্ন সড়ক এটি। তাই গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটিকে দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সাধারন মানুষ।
সূত্রমতে, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি দু’পাশে অবৈধ স্থাপনা, ফুটপাত দখলদার দখল করে বসে আছে স্থাণীয় শ্রমিকলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত প্রভাবশালী এক নেতা। যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জের এসড়কটি দখলের কারনে প্রতিদিনই সৃষ্টি হচ্ছে অসহনীয় যানজট। এমনকি রাস্তাটি দখলে করে অপরিকল্পিতভাবে ট্রাক ষ্ট্যান্ড গড়ে তুলার কারনে রাতের অন্ধকারে ছিনতাইযের কবলে পড়েছে সাধারন মানুষ। এবং অন্ধকারচ্ছন্ন এ সড়কটিতে বৃদ্ধি পেয়েছে মাদক ব্যবসায়ীদের আনাগোনা। এই সব ট্রাকের অলিগলিতে রাতের অন্ধকারে চলে মাদক ব্যবসা ও মাদক সেবীদের আড্ডা বলে জানা যায়।
এই সড়কের যাতায়াতরত যাত্রী বাদল তিনি জানান, আমার ব্যবসা পুরান ঢাকার ইসলামপুরে। এই সড়কটিই হচ্ছে আমার যাতায়াতের অণ্যতম মাধ্যম। যার কারণে নিয়মিত আমার বাদ্য হয়ে এই সড়কটিতে চলাচল করতে হয়। স্বাভাবিকভাবে যানজট না থাকলে আমার গন্তব্যস্থলে ৩০ মিনিটি সময় লাগার কথা থাকলেও যানজটের কবলে পড়ে দেড় ঘন্টারও অধিক সময় লাগছে। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক ঐ এলাকায় বসবাসরত স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, সড়কের দু’পাশে যে অবৈধ দখলদার কতৃক গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দখল হয়ে আছে তা প্রশাসন চাইলেই দখলমুক্ত করা সম্ভব। প্রশাসনের আন্তরিকতার অভাবে এ সড়কের আশে পাশের রাস্তা দখলমুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি দিয়ে যাতায়াতরত হাজারো মানুষের কথা বিবেচনা করে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন এমনটাই প্রত্যাশা করেন তিনি।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি রেজাউল হক দিপু ফতুল্লা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংবাদিকদের জানান, আমরা নিয়মিতই সড়কের পাশে অবৈধভাবে দখলে থাকা দখলদারদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছি। যত প্রভাবশালী ব্যক্তিই হউক না কেন জনগনের স্বার্থে দ্রæত সময়ের মাধ্যমে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জ সড়কের পাশে অবস্থিত অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াসহ দখলকৃত সড়ক উদ্ধারের মাধ্যমে জনগনের দীর্ঘদীনের দাবি পূরন করা হবে।