ফতুল্লা মডেল থানার হাজিগঞ্জ এলাকায় আতংক ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী আলোচিত চাঞ্চল্যকর ইমন হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত পলাতক আসামি দুর্ধর্ষ মো. সানজিদ হোসেন ওরফে সানজিল (৩৬) কে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব—১১।
সানজিল ইমন হত্যা মামলার পলাতক আসামি। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা। শনিবার রাত ১১টার দিকে নিউ হাজিগঞ্জ বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ফতুল্লা মডেল থানায় হস্তান্তর করে।
গ্রেপ্তারকৃত মো. সানজিল ফতুল্লা মডেল থানার নিউ হাজিগঞ্জ বাজার এলাকার মৃত আলী হোসেনের ছেলে। এদিকে সানজিলের গ্রেপ্তারের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে নেমে আসে স্বস্তি।
স্থানীয়রা জানায়, গ্রেপ্তারকৃত সন্ত্রাসী সানজিল কখনো ভুয়া পুলিশ, ভুয়া দুদক কর্মকর্তা, কখনো চাঁদাবাজ, কখনো কিশোরগ্যাং লিডার, কখনো ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামীলীগের পরিচয় ব্যবহার করে অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। এর পাশাপশি গড়ে তুলেছে মাদকের সাম্রাজ্য।
আইনশৃংখলাবাহিনী প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নির্বিঘ্নে অপরাধ কর্মকান্ডসহ চালিয়ে যাচ্ছে মাদক ব্যবসা। এছাড়াও প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় প্রতিনিয়ত সে আরও ভয়ংকর হয়ে উঠছে।
জানাগেছে, গত বছরের ১০ অক্টোবর হাজীগঞ্জ, বাঁশমুলীর মোড় এলাকায় এ নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটে। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ইমন (২২) কে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যাকান্ড ঘটায় এবং হত্যার রহস্য গোপন ও আলামত নষ্ট করার জন্য ভিকটিমের মৃত দেহ পরিত্যক্ত বাড়ির ভিতরে জমে থাকা পানিতে ফেলে রাখে। ঘটনাটি স্থানীয় জনসাধারণে মাঝে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
এ ঘটনায় হত্যাকান্ডের শিকার ইমনের পিতা মো. ইব্রাহিম বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নং—১৭(১০)২২।
বছর খানেক আগে এক ব্যবসায়ীর কাছে দুদক কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ২ লাখ টাকা দাবি করতে গিয়ে স্থানীয় জনতা ও পুলিশের হাত ধরা খেয়েও কৌশলে সানজিল পালিয়ে যায়। তবে গ্রেপ্তার হয় তার সহযোগী ভুয়া দুদক কর্মকর্তা হায়দার।
গ্রেপ্তারের পর ভুয়া দুদক কর্মকর্তা হায়দার জানায়, সানজিল আমাকে দিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের চেষ্টা করে। সে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে আমাকে ব্যবহার করে বহু টাকা হাতিয়ে নেয়।
পরে ফতুল্লা থানা পুলিশ পলাতক সানজিলকে গ্রেপ্তার করে। দীর্ঘদিন কারাবাসের পর জেল থেকে বেরিয়ে এসে চাঞ্চল্যকর ইমন হত্যাকান্ড ঘটায়। এছাড়াও বছর দুই আগে তল্লার তুষার নামে এক ছেলেকে আঘাত করে রক্তাক্ত করে সানজিল। এ ঘটনায়ও থানায় মামলা হয়।
স্থানীয়রা এই ভয়ংকর সন্ত্রাসী তানজিল যাতে আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে বেরিয়ে না আসতে পারে সে বিষয়ে আইনশৃংখলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সুষ্ঠু ও নিরেপক্ষ তদারকিসহ এই অপরাধীর দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করেন।