এশিয়ান সায়েন্টিস্ট’–এর সেরা ১০০ বিজ্ঞানীর তালিকায় স্থান পাওয়া তিন বাংলাদেশি ফেরদৌসী কাদরী, সায়মা সাবরিনা ও সালমা সুলতানা (ছবিতে বাঁ থেকে)
গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা এশিয়ার শীর্ষ ১০০ জন বিজ্ঞানীর একটি তালিকা প্রকাশ করেছে সিঙ্গাপুরভিত্তিক সাময়িকী ‘এশিয়ান সায়েন্টিস্ট’। তাদের এ তালিকায় বাংলাদেশের তিনজন বিজ্ঞানীর নাম এসেছে।
‘দ্য এশিয়ান সায়েন্টিস্ট ১০০’ শিরোনামে গত সোমবার এ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে স্থান পাওয়া বাংলাদেশিরা হলেন সালমা সুলতানা, ফেরদৌসী কাদরী ও সায়মা সাবরিনা। বিজ্ঞান ও গবেষণায় আগেও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছিলেন এই তিন নারী।
এশিয়ান সায়েন্টিস্টের ওয়েবসাইটে বলা হয়, এবার ষষ্ঠবারের মতো এ তালিকা করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন থেকে শুরু করে কোভিড–১৯–এর মতো এ বছরের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা মোকাবিলায় ভূমিকা রাখা গবেষক ও উদ্ভাবকদের এবার বেছে নেওয়া হয়েছে।
ওয়েবসাইটে বিজ্ঞানীদের পরিচয় এবং তাঁদের গবেষণার বিষয়ে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হয়েছে। এতে দেখা গেছে, বাংলাদেশ ছাড়াও চীন, ভারত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপাইন, হংকং, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের বিজ্ঞানীরা এ তালিকায় বেশি এসেছেন। এই বিজ্ঞানীরা সংকটময় এই সময়ে মলিকুলার ইমেজিং থেকে কোয়ান্টাম কম্পিউটিং পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণায় অনন্য ভূমিকা রেখেছেন।
তালিকার তিন বাংলাদেশির একজন ড. ফেরদৌসী কাদরী আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) ইমিউনোলজি বিভাগের প্রধান। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে শিশুদের মধ্যে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে তাঁর প্রচেষ্টা বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত। ২৫ বছর ধরে কলেরা মহামারি থেকে মানুষকে রক্ষার জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের টিকা নিয়ে কাজ করেছেন এমন কয়েকজন মানুষের মধ্যে তিনি অন্যতম। ২০২০ সালে ল’রিয়েল-ইউনেসকো ফর ওমেন ইন সায়েন্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন তিনি।
আরেকজন হলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক সায়মা সাবরিনা। ন্যানোম্যাটেরিয়্যালের ব্যবহার নিয়ে গবেষণার জন্য ২০২০ সালে ওডব্লিউএসডি-এলসেভিয়ের ফাউন্ডেশন অ্যাওয়ার্ড ফর আর্লি ক্যারিয়ার ওমেন সায়েন্টিস্ট ইন দ্য ডেভেলপিং ওয়ার্ল্ড পেয়েছেন তিনি।
তালিকায় স্থান পাওয়া অপরজন সালমা সুলতানা হলেন মডেল লাইভস্টক অ্যাডভান্সমেন্ট ফাউন্ডেশনের (এমএএলএফ) চেয়ারম্যান। বাংলাদেশে পশুচিকিৎসাবিষয়ক শিক্ষাবিস্তারে ভূমিকা রয়েছে তাঁর। তিনি পশুর রোগ নির্ণয়ের জন্য ল্যাবরেটরিসহ একটি ভেটেরিনারি হাসপাতালও গড়ে তুলেছেন, যেটা বেসরকারি পর্যায়ে বাংলাদেশে প্রথম। প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের পশুর চিকিৎসায় অগ্রণী ভূমিকা রাখার জন্য ২০২০ সালে নরম্যান ই বোরল্যাগ অ্যাওয়ার্ড এবং ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ ফাউন্ডেশনের স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি।