মহামারীর মধ্যেই দেশের ১৩ জেলার ৪১ উপজেলার ২০৪ ইউনিয়নে স্থানীয় সরকারের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভোট শুরু হযেছে। সোমবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হ্ওয়া ভোটগ্রহণ একটানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে।
২০৪টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ২০টিতে ইভিএমে (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) ভোট হবে।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রতি অনাস্থা জানিয়ে দলীয় সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বিরোধী দল বিএনপি এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না।
তবে অনেকেই দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটযুদ্ধে লড়ছেন।
এদিকে ২৮টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী থাকায় তারা বিনাভোটেই নির্বাচিত হয়েছেন।
গত শনিবার রাত ১২টা থেকে শেষ হয়েছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। ভোটের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ইতিমধ্যে মাঠে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, নির্বাচনী এলাকায় শুরু হয়েছে টহল।
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচন তার প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং উৎসবের আমেজ হারিয়ে তাতে সংঘাত এবং কোন্দল বেড়েই চলছে। পাশাপাশি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান হিসেবে অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এছাড়া পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগের ফলে জনপ্রতিনিধিরা তাদের কাজ করতে গিয়ে জটিলতায় পড়ছেন বলে মনে করেন তারা।
প্রথম ধাপে দেশের ৩৬৭টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও করোনার উচ্চ সংক্রমণের কারণে খুলনা বিভাগের সবগুলোসহ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং নোয়াখালী জেলার ইউনিয়ন পরিষদের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।
গত ১০ জুন জরুরি সভা ডেকে সব মিলিয়ে দেশের ১৬৩টি ইউনিয়ন পরিষদের ভোট স্থগিত করে ইসি।
মহামারীর মধ্যেই স্থানীয় সরকারের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভোট করার প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রফিকুল ইসলাম গতকাল রবিবার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘করোনার মধ্যেই কিছু কমিশনার ভোট না করার সিদ্ধান্ত দিলেও যেহেতু কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে তাই ভোট হচ্ছে। ’
ভোটের আগে সহিংসতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পর্যাপ্ত পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন রয়েছেন, তারা বিষয়টি দেখবেন। ’
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন গতকাল রবিবার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করায় বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হচ্ছে। পার্টির মধ্যেই আলাদা আলাদা গ্রুপ তৈরি হয়ে যাচ্ছে একেবারে ইউনিয়ন পর্যায়ে। দলীয় প্রতীকে ভোট হওয়ার ফলে গ্রাম পর্যায়ে দলাদলি মারামারি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ’
নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ রবিবার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমরা প্রোটেকশন নিয়েছি। যেখানে যে ডেপ্লয়মেন্ট করা দরকার তার চেয়ে বেশি করা হয়েছে। যেখানে স্থানীয় প্রশাসন যা চেয়েছে তার চেয়ে বেশি পেয়েছে। কোথাও কোথাও তিন প্লাটুন চেয়েছে সেখানে সাত প্লাটুন দেওয়া হয়েছে। ’ বিজিবি বর্ডার থেকে আনাও কঠিন তারপরও কিন্তু আমরা অনেক দিয়েছি বলে জানান এই কর্মকর্তা।
করোনা মহামারীতে নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রতি বুথে স্বাস্থ্যসেবা কিট, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বরাদ্দ করা হয়েছে। মাস্ক ছাড়া কেউ যাতে বুথে প্রবেশ না করতে পারে সে বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে।