প্রিন্ট নারায়ণগঞ্জঃদীর্ঘ ১৬ বছরেও শেষ হয়নি নারায়ণগঞ্জে সিরিজ বোমা হামলার বিচার কাজ। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের আদালতপাড়ায় সিরিজ বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। তবে একই দিন সারাদেশে (মুন্সিগঞ্জ ছাড়া) একযোগে সিরিজ বোমা হামলার হয়। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। তোলপাড় শুরু হয় আইনশৃংখলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার ভেতর।
এদিকে ১৬ বছর পেরিয়ে গেলেও নারায়ণগঞ্জে এই হামলা মামলার বিচার কার্যক্রম থমকে আছে।
তবে নারায়ণগঞ্জ জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান বুলবুল বলেন, নারায়ণগঞ্জে সিরিজ বোমা হামলার মামলাটি বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল আদালতে বিচারাধীন ও সাক্ষী পর্যায়ে আছে। এরই মধ্যে বেশকিছু সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য দিলেও করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে সাক্ষ্য গ্রহণ বন্ধ আছে। বর্তমানে আদালত খুলতে শুরু করেছে। সাক্ষীরা আদালতে আসলেই সাক্ষ্যগ্রহণ সম্ভব। আর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলে বিচার কার্যক্রম শেষ হওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি হবে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সদর উপজেলার ফতুল্লায় জেলা আদালত ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। একই সময়ে মুন্সিগঞ্জ ছাড়া দেশের বাকি সবগুলো জেলার বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। তবে নারায়ণগঞ্জে বোমা হামলায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এ ঘটনায় তৎকালীন ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে বিস্ফোরক আইনে দুটি পৃথক মামলা করেন। প্রাথমিক অবস্থায় মামলায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়। পরবর্তীতে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) দেশে সিরিজ বোমা হামলার দায় স্বীকার করে। তাদের স্বীকারোক্তির প্রেক্ষিতে ২০০৬ সালের ২৯ জানুয়ারি সংগঠনটির প্রধান আবদুর রহমানসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ।
মামলায় বাকি অভিযুক্তরা হলেন- সিদ্দিকুর রহমান ওরফে বাংলা ভাই, সাইফুল্লাহ, আকতার হোসেন, আবুল হোসেন, আতাউর রহমান সানি, তানভীর ওরফে জিয়াউর, ওবায়দা ওরফে জিয়াউল, রবিউল ইসলাম, আরিফুল, ফতুল্লার শাসনগাঁও এলাকার আবদুল আজিজ, আতাউর রহমান, রকিবুল ইসলাম ও মাজু মিয়া।
২০০৭ সালের ২৯ মার্চ অন্য মামলার সাজা হিসেবে আবদুর রহমান, বাংলা ভাই, আকতার হোসেন, আতাউর রহমান সানি, খালেদ সাইফুল্লাহর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। অন্য আসামিরা কারাগারে আছেন।
এই ঘটনায় সবশেষ ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি মো. কেফায়েতুর রহমান ওরফে নোমানকে (৩৫) গ্রেফতার করে র্যাব-১১। গ্রেফতারের পর র্যাব জানিয়েছিল, নারায়ণগঞ্জের বোমা হামলায় কেফায়েতুর রহমান সরাসরি জড়িত ছিলেন। এছাড়া, জেএমবি’র শীর্ষ সদস্যদের সঙ্গে তার সরাসরি যোগাযোগ ছিল।