প্রিন্ট নারায়ণগঞ্জ: অনেকটা সিনেমার গল্পের মতই নিজের রাজনৈতিক জীবনী সাজিয়ে তা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ করে নিজ ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষ ও রাজনীতির উপর মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টায় মরিয়া নারায়ণগঞ্জ মহানগর ১১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি পদপ্রার্থী কামাল হোসেন ওরফে ‘দেড় লাখ’ কামাল।
দু:সময় কিংবা সুসময় অতীতে ১১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সর্বক্ষেত্রে নিজের অবদানের কথা উল্লেখ করে তা প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন সবখানে।
গত ২৭/৫/২০২৩ (শনিবার) স্থানীয় একটি গণমাধ্যমে তার রাজনৈতিক জীবনের গল্প তুলে ধরে একটি খবর প্রকাশিত হলে, সেখানকার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের তা নজরে আসে, যেটি তারা ভূয়া এবং সম্পূর্ণ মিথ্যা গল্প বলে দাবি করছেন।
তারা বলছেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে পরিবার সহ দেশ ত্যাগ করে পরবর্তীতে এমপি শামিম ওসমান দেশে ফিরে আসলে তিনিও তার হাজীগঞ্জের মাটিতে ফিরে এসে আওয়ামীলীগে সক্রিয় ভূমিকা পালন করার যে গল্প তিনি শোনাচ্ছেন,তা সত্য নয় ।প্রকৃতপক্ষে আ:লীগের দু:সময় অর্থাৎ ১৯৯৮সালে জীবিকা নির্বাহের জন্যই পরিবার রেখে কামাল হোসেন একাই সৌদি আরব পাড়ি জমান এবং ২০১১ সালে দেশে ফিরে আসেন।এর মাঝে ছুটিতে দেশে এলেও কখনো আওয়ামীলীগের কোন সাংগঠনিক কাজে তাকে অংশগ্রহন করতে দেখা যায় নি, যার প্রমান ১৯৯৬ ও ২০০৩ সালে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের প্রাথমিক সদস্য পদ (কাউন্সিলর) পর্যন্ত পান নি তিনি ।
১৩ বছর পর অর্থাৎ ২০১১ সালে (বর্তমান ক্ষমতাশীন দল আওয়ামীলীগ এর সু-সময়ে) স্থায়ী ভাবে দেশে ফিরেই রাজনীতিতে নিজেকে ওয়ার্ড ছাত্রলীগ (সভাপতি/সাধারন সম্পাদক) হিসেবে পরিচয় করাতে থাকেন প্রাইমারীর গন্ডী পার হতে না পারা কামাল হোসেন । জানা যায় কামাল হোসেন নিজের নাম ঠিকানা সঠিকভাবে লিখতে না পারলেও (স্ব-ঘোষিত) আওয়ামীলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে নিজ এলাকায় প্রহমনের বিচার করে নিরীহ মানুষের কাছ থেকে জোর পূর্বক উৎকোচ গ্রহন করতে থাকে । ধীরে ধীরে বিভিন্ন মিল কারখানা ও ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে দলের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজি শুরু করেন ।
স্থানীয় একটি পত্রিকায় কিছুদিন পূর্বে প্রকাশিত তার চাঁদাবাজির একটি সংবাদের সূত্রে যানা যায় , ওসমান পরিবারের একজন জজনপ্রিয় সদস্যের নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকার মুদী ব্যাবসায়ী ও ১১ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য জনাব নাজিম উদ্দিন এর কাছ থেকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে জোড় পূর্বক ১,৫০,০০০(দেড় লাখ) টাকা নিয়ে যায় । তার ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে আরো টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করলে , নাজিম উদ্দিন ওসমান পরিবারের সেই জনপ্রিয় সদস্যের স্বরনাপন্ন হন এবং কামাল হোসেনকে ডেকে নিয়ে তার অপকর্মের কথা জানতে চাওয়া হয় । অপকর্মের কথা স্বীকার করলে ওসমান পরিবারের সেই জনপ্রিয় সদস্যের নির্দেশে কামাল হোসেন তৎক্ষনাত সেই দেড় লাখ টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হয় এবং ভবিষ্যতে তিনি যেনো দলের নাম বা ওসমান পরিবারের নাম ভাঙ্গিয়ে কোন চাঁদাবাজি এবং কোন অপকর্ম না করে সে বিষয়ে তাকে কঠোর হুশিয়ারী করা হয়।
সেই থেকেই কামালকে ১১ নং ওয়ার্ডবাসী ‘দেড় লাখ’ কামাল নামেই চেনে। প্রকাশিত একটি সংবাদে দেখা যায় কিছুদিন পূর্বে নগরীর খানপুরে অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ বার একাডেমী স্কুলে অনুষ্ঠিত ১১ নং ওয়ার্ড আওমীলীগের সন্মেলনে হাজারো নেতাকর্মী সমর্থন জানিয়েছে। কিন্তু সেই সম্মেলনের প্রকাশিত কয়েকটি সংবাদের ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায় তার উল্টো চিত্র। ফুটেজে দেখা যায় শুধু মাত্র কিছু সংখ্যক নেতাকর্মী তাকে সমর্থন জানালেও ওয়ার্ডের অধিকাংশ নেতাকর্মী সহ কাউন্সিলরগন সমর্থন জানিয়েছেন একই ওয়ার্ডের আরেকজন সভাপতি পদপ্রার্থী বর্তমান ১১ নং ওয়ার্ডের ত্রান ও সমাজ কল্যান সম্পাদক আলহাজ্ব সেলিম আহাম্মেদ হেনাকে।
সভাপতি হলো ওয়ার্ড কমিটির একটি সর্বোচ্চ পদ, এই পদে দায়িত্ব পালনকারী ব্যাক্তিকে অবশ্যই সৎ, শিক্ষিত, বিচক্ষণ ব্যাক্তিত্ব সম্পন্ন, ওয়ার্ডের গ্রহনযোগ্য ও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতায় দূরদর্শী হতে হয়। যার কারনে উক্ত ওয়ার্ডের নেতাকর্মী সহ ৪০০ জন কাউন্সিলের মধ্যে ৩৫০ জন কাউন্সিলর ও ২৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিম আহাম্মেদ হেনাকে ১১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে পেতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর লিখিত আবেদন প্রেরন করেন। সেখানে উল্লেখ থাকে কোন অবস্থাতেই ওয়ার্ডের তৃনমুল আওয়ামী লীগ একজন চাঁদাবাজকে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হলে তা মেনে নিবে না।
মূলত পরিশেষে বলা যায়, আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র মোতাবেক ৫৮(গ) ধারায়, কোন নবাগত সদস্য অনুমোদন এর তিন বছর পূর্ন না হওয়া পর্যন্ত সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক বা দলীয় কর্মকর্তা হিসাবে কোন দায়িত্ব গ্রহন করিতে পারবে না।