প্রিন্ট নারায়ণগঞ্জঃ পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে আটদিনের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল হতেই বিধিনিষেধ শিথিল হতেই নগরের মার্কেটগুলোতে বেড়েছে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। প্রখর রোদ আর করোনা ভীতিকে উপেক্ষা করে ক্রেতারা ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন। মার্কেটের পাশাপাশি ফুটপাতের হকারদের অস্থায়ী দোকানেও নেমেছে ক্রেতাদের টল। স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছে না অধিকাংশ ক্রেতা এবং বিক্রেতারা। বাড়ছে মরণঘাতি করোনায় সংক্রামণের শঙ্কা।
জেলা স্বাস্থ্যবিভাগের সূত্রমতে, গত ২৪ ঘন্টায় আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে দুইজন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকার বাসিন্দা ও একজন সোনারগাঁও এলাকার বাসিন্দা। এ নিয়ে জেলায় মৃত্যুর সংখ্যা দাড়িয়েছে ২৩৩ জনে। এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৭৯০ জনের। এরমধ্যে আক্রান্ত হয়েছে ২৪৭ জন। এতে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৬ হাজার ৫৫৩ জন। আক্রান্তের সংখ্যা দিনে দিনে বাড়লেও স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই ঈদ মার্কেটে।
শুক্রবার (১৬ জুলাই) শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাড়া থেকে ডিআইটি পর্যন্ত ঘুরে দেখা যায়, ঈদের কেনাকাটায় পরিবার পরিজন নিয়ে শপিং করতে গিয়ে অনেকেই মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। ক্রেতারা মাস্ক পড়লেও শিশুদের মুখে নেই মাস্ক। ফুটপাতে নেই চলাচলের জায়গা। ফুটপাতে হকারদের দোকান ও অধিক ক্রেতাদের কারণে নেই পথচারীদের মাঝে নেই সামাজিক দুরুত্ব। অনেকেই ঠাসাঠাসি এড়াতে ফুটপাত ছেড়ে সড়কের যানবাহনের পাশ দিয়েই চলাচল করছে। বাড়ছে দূর্ঘটনার শঙ্কা।
ঈদের বাজার করতে আসা মো. রহমান বলেন, “শপিং করতে আসা মানে একটা বিপদ। পরিবারের ছোট বাচ্চাদের জন্য কাপড় নিতে আসলাম, কিন্তু বাজারের যে অবস্থা তাতে মাথা ঠিক থাকে না অনেকেই মাস্ক ব্যবহার করছেন না। এছাড়া যে ভিড় তাতে গায়ে গায়ে ধাক্কা দিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে। এজন্য ফুটপাত ছেড়ে রাস্তা দিয়ে চলাচল করছি।”
চৌধুরী মার্কেটে বাজার করতে আসা ক্রেতা ফরিদা আক্তার বলেন, “মার্কেটে এসে দেখছি অনেকে স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না, এটা তো আমাদের জন্য ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনতে পারে। মার্কেটে না এসেও পারি না, ঈদে নিজেদের জন্য কিছু না কিনলেও বাচ্চাদের জন্য কেনাকাটা করতে হয়।”
নিজের মুখে মাস্ক থাকলেও আলম রহমানের কোলের শিশুর মুখে মাস্ক নেই। কালিবাজার শায়েস্তা খান সড়কে হকারদের থেকে পোশাক ক্রয় করছেন তিনি। শিশুর মাস্কের কথা জিজ্ঞেস করতেই তিনি বলেন, “আল্লায় দেখব আমাগো”। মার্কেটে ক্রেতাদের ঢল দেখে যাত্রীর অপেক্ষোয় থাকা একজন রিকশা চালক বলেন, “লকডাউন আসলেই শোনা যায়, মানুষের ঘরে খাবার নাই। কিন্তু লকডাউন খুললেই শুরু হইয়া যায় জামা কিনা”।
নবাব সিরাজউদ্দোল্লাহ সড়কের হকার বিক্রেতা মনির মিয়া ক্রেতাদের সাথে বেঁচাকেনায় ব্যস্ত। সাথে কথা হলে তিনি আইনিউজের প্রতিনিধিকে জানান, “আজ সকাল থেকেই যাত্রী বেশি আছে। আমাদের ইনকাম ভালো হইতেছে। লকডাউনে অনেক কষ্ট হয়ছে। কোন ইনকাম ছিল না। কিন্তু এখন আল্লাহর রহমতে বেশ ভালোই চলতাছে। আবার নাকি লকডাউন দিয়ে দিবো। দেহি কয়টা টাকা আয় হইলে, লকডাউনে কোন রকমে সংসারটা যদি চালাইতে পারি!”