প্রিন্ট নারায়ণগঞ্জঃ রূপগঞ্জে চামড়ার বাজারে ধ্বস নেমেছে। সারাদেশের মতো এখানে একই পরিস্থিতি। লাখ টাকার গরুর চামড়ার দাম সর্বোচ্চ তিনশ’ টাকা। অথচ গত তিন-চার বছর আগে লাখ টাকা ম‚ল্যের গরুর চামড়া বিক্রি হতো ২/৩ হাজার টাকায়। মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, রূপগঞ্জে চামড়ার বড় ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতে হচ্ছে নামে মাত্র দামে। গত বছরগুলোর তুলনায়ও এবার চামড়া বিক্রি হচ্ছে চার ভাগের এক ভাগ দামে। মৌসুমী ব্যবসায়ীরা একটু লাভের আশায় ব্যবসা করে পড়েছেন লোকসানের মুখে।
জানা গেছে অনেক এলাকায় চামড়ার কম হওয়ায় তারা মাটিতে গর্ত করে পুতে কিংবা শীতলক্ষ্যার নদীর পানিতে ফেলে দিয়েছে। চামড়ার বাজার ধ্বসের শিকার মৌসুমী ব্যবসায়ী অনেকে দিশেহারা। হতদরিদ্র মানুষ কোরবানীর পশুর চামড়া বিক্রির টাকা পেয়ে থাকে। এবার তাদের ভাগ্যেও জোটেনি কাংখিত সেই টাকা।
তারাবো পৌরসভার বরপা শান্তিনগর গ্রামের শফিউদ্দিন জানান, গত বছরগুলোতে লাখ টাকার গরুর চামড়া ২/৩ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন। এবার তিনি ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার গরুর চামড়া মাত্র সাড়ে ৪শ’ টাকায় বিক্রি করেছেন। এ ধরণের অভিযোগ আরো অনেকের। অনেকে চামড়ার কম দামের কারনে বিক্রি না করে নিজ নিজ এলাকার মাদ্রাসা ও এতিমখানায় দান করে দিয়েছেন। অনেকে আবার ক্ষোভে চামড়া পানিতে ফেলে দিয়েছেন। বকরী বা খাসির চামড়া অন্যান্য বছর দেড়শ’ থেকে দুইশ’ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। এবার চামড়ার দাম মাত্র ২০ থেকে ৪০ টাকা। এবার মৌসুমী চামড়ার ব্যবসায়ীরাও বকরীর চামড়ার দাম না পাওয়ায় অনেকে চামড়া ফেলে দিয়েছেন।
রূপগঞ্জের চামড়া ব্যবসায়ী রাধা চন্দ্র দাস জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও তিনি চামড়ার ব্যবসা করেন। সরকারি নির্ধারিত মূল্য না পেয়ে আড়াই লাখ টাকা তিনি লোকসানে পড়েন। কিন্তু ট্যানারী মালিকরা সিন্ডিকেট তৈরি করে সরকারি নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা না করে পানির দামে চামড়া বিক্রি করতে তাদের বাধ্য করেছেন বলে অভিযোগ করেন রাধা চন্দ্র দাস। এ ধরণের অভিযোগ সাওঘাট এলাকার চামড়া ব্যবসায়ী বিধ‚ ভ‚ষণ চন্দ্র দাস, চন্দন চন্দ্র দাস, দ্বীনু চন্দ্র দাস, জগদ্বীস চন্দ্র দাস ও নিতীন্দ্র চন্দ্র দাসের।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ্ নুসরাত জাহান বলেন, রূপগঞ্জে কোন চামড়া ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেট আছে বলে আমার জানা নেই। নানা প্রতিক‚লতায় চামড়ার ন্যায্য দাম পায়নি বিক্রেতারা।