প্রিন্ট নারায়ণগঞ্জঃ দীর্ঘ ৪০ দিন পর নারায়ণগঞ্জে ঘুরবে গণপরিবহনের চাকা। বুধবার (১১ আগস্ট) কাকডাকা ভোর থেকে গভীর রাত অবধি জেলা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছুটে বেড়াবে বাস, ট্রেন ও লঞ্চসহ নানা পরিবহন। এবং জেলার ভেতরও বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করবে ছোট-বড় যানবাহন। হাজার হাজার যাত্রীর পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠবে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, চাষাড়া ও নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশন, লঞ্চ ঘাট, সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড, শিমরাইল মোড়, সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর, মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা, বন্দরের মদনপুর চৌরাস্তা, ফতুল্লার পঞ্চবটীসহ বিভিন্ন পয়েন্ট।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুরোধে সরকার ঘোষিত টানা ৪০ দিনের বিধিনিষেধ শেষে বুধবার থেকে ফের চালু হচ্ছে গণপরিবহন। প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগের মতো স্বাভাবিক ভাড়ায় চলবে পরিবহনগুলো।
মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন বাস, লঞ্চ ও রেলস্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, গণপরিবহন চালুর জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন মালিক-শ্রমিক ও কর্মচারীরা।
আলাপকালে শ্রমিকরা জানান, ৪০ দিন পর স্বাভাবিকভাবে কাজে ফিরে যেতে পারবে বলে তাদের আনন্দ হচ্ছে। এতদিন বিধিনিষেধে কাজ না থাকায় পরিবার নিয়ে দুর্বিষহ জীবন কেটেছে। কাল থেকে গণপরিবহনের চাকা ঘুরলে মজুরি পাবেন। সংসারের প্রায় থমকে যাওয়া চাকা আবার সচল হবে বলে মন্তব্য করেন শ্রমিকরা।
নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা রুটে চলাচলকারী বন্ধন ও উৎসব পরিবহনের বেশ কয়েকজন শ্রমিকের সঙ্গে কথা হয়। এরমধ্যে জামাল মিয়া ও আক্কাস আলী নামে দুই শ্রমিক জানান, বাস চালু হবে অনেক খুশি লাগছে। দীর্ঘদিন গাড়ি বন্ধ থাকায় চরমভাবে অর্থ সংকটে পড়েছি। পরিবার নিয়ে অনেকটা মানবেতর জীবন-যাপন করতে হয়েছে। কারো কাছে হাতও পাততে পারি নাই। তবে বাস চালুর খবরে তারা আনন্দিত হলেও শংকাও কাজ করছে তাদের মধ্যে, যদি আবারো লকডাউন হয়।
চাষাড়া-আদমজী-চিটাগাং রোড রুটে চলাচলকারী দুরুত্ব গাড়ির শ্রমিক সোহাগ জানায়, বিকালে ওস্তাদ ফোন করে কইছে সকালে আইতে। গাড়ি আবার চলবো। আনন্দ লাগতাছে। কতদিন বইয়া রইছি। কোন কাম নাই। হাতে টেহা-পয়সাও নাই। অনেক কস্ট করছি।
এদিকে জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে বিধিনিষেধ উঠে গেলেও নারায়ণগঞ্জে করোনার প্রকোপ কমেনি। বরং বাড়ছে। সবশেষ গত ২৪ ঘন্টায় নারায়ণগঞ্জে আরও ২ জনের মৃত্যু ও ৩০৪ জন আক্রান্ত হয়েছে।
তবে স্বাস্থ্য ও রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা শতভাগ মানুষকে মুখে মাস্ক পরাসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। অন্যথায় সংক্রমণ ও মৃত্যু আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।