প্রিন্ট নারায়ণগঞ্জঃ প্রথমে নারায়ণগঞ্জের গুরুত্বপূর্ন পয়েন্টে বিশালাকার বিলবোর্ড স্থাপন, অতঃপর ইংরেজি বাংলা মিলিয়ে প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন। তার পর থেকেই একের পর এক কার্যকলাপ করে নিজেকে ফুটিয়ে তুলতে চাইছেন কামরুল ইসলাম বাবু ওরফে আদুরে বাবু। করোনাকালে সকল রাজনৈতিক দল তাদের কর্মকান্ড স্থবির রাখলেও উলটো ভূমিকায় তিনি। গঠন করেছেন জয় বাংলা নাগরিক কমিটি, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে লাগিয়েছেন ব্যানার। সবশেষ করোনা সংক্রমণের মাঝে স্বাস্থ্যবিধিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শহরে আয়োজন করেছেন সংবর্ধনা অনুষ্ঠান!
রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টদের মতে, নিজের অস্তিত্ব জানান দিতেই অহেতুক এই শোডাউনের আয়োজন করেছেন মেয়র প্রার্থী। নিজেকে জয় বাংলার লোক দাবী করলেও মানববন্ধনে ডেকে এনেছেন বিএনপির পুর্নগঠনের উদোক্তা দাবী করা কামরুল ইসলাম নাসিম। তাকে ঘিরে আয়োজন করা এই অনুষ্ঠানে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা আপত্তি করায় ফিরে গেছেন মাসদাইরে। সেখানে গিয়ে ঘোষণা দিয়েছেন আধাবেলা হরতালের! যুক্তি হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন মেয়রের পদত্যাগের দাবী। এমন অদ্ভুত সব কর্মকান্ড করে রীতিমত বিব্রতকর অবস্থা তৈরী করে চলছেন কামরুল ইসলাম বাবু।
মেয়র প্রার্থীর এমন উদ্ভট সব কর্মকান্ড নতুন কিছু নয়, গত ২ জুন নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তার কথাবার্তা নিয়ে হাস্যরস জন্ম দেয় গণমাধ্যমকর্মীদের মনে। লিখিত বক্তব্যে অসংখ্য ভুল আর সেসব পড়তে গিয়েও আটকে গেছেন বহুবার। সাধু-চলিত মিশিয়ে তৈরী করেছেন ভাষার জগাখিচুড়ি। তার সাথে রয়েছে ইংরেজি বাংলা মিলিয়ে নিজেকে অত্যাধুনিক প্রমানের চেষ্টা। লিখিত বক্তব্যে এক লাইনের সাথে আরেক লাইনের মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তার রাজনৈতিক পরিচয় হিসেবে টেনে আনেন আওয়ামী লীগের নাম। যদিও এই দলের সদস্য হতে আগ্রহী নন তিনি। তবুও নির্বাচনে প্রত্যাশা করেন নৌকার প্রতীকের। এমন অসাধ্য কিভাবে সম্ভব তা নিয়ে দলের বেশ কয়েকজন প্রবীণ রাজনীতিকের কাছ জানতে চাইলে তারাও এর জবাব দিতে পারেননি। এর কিছুদিন পরে তার সাথে দেখা যায় শহরে মোটরসাইকেল নিয়ে দাপিয়ে বেড়ানো এক পাতিনেতার সাথে। যিনি ইতোমধ্যে বিতর্কিত হতে প্রশাসনের সন্দেহের তালিকায় উঠে এসেছেন। এমন ব্যক্তির সাথে মেয়র প্রার্থী কি সম্পর্ক তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে সচেতন মহলে।
সবশেষ ১২ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে কামরুল হাসান নাসিম নামে এক ব্যক্তিকে সংবর্ধনা দেয়া উদ্দেশ্যে জমায়েত করেন বাবু। সেই অতিথি বিএনপির পূর্নগঠনের উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত গণমাধ্যমের কাছে। আওয়ামী লীগের চেতনা ধারণ করে বিএনপি ঘেঁষা ব্যক্তিতে অতিথি করার ভেতর কোন সূত্র খুঁজে পাননি রাজনীতিবিদরা। তার উপর করোনা সংক্রমণের মাঝে শত শত নেতাকর্মীর উপস্থিতি ঘটানো কোন মেয়র প্রার্থীর কাছ থেকে ছিলো একেবারেই অপ্রত্যাশিত।
সচেতন মহলের মতে, নারায়ণগঞ্জ সিটির জন্য মেয়র হবার দাবী রাখতেই পারেন বাবু। তবে তার আগে তাকে হতে হবে স্মার্ট এবং সচেতন। পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য কার্যকরী কিছু করে দেখাতে পারলে তবেই মিলবে বিপুল জনসমর্থন যা তাকে ভোটের মাঠে শক্তিশালী করবে। অন্যথায় একের পর এক কর্মসূচী আর উদ্যোগ হাতে নিয়ে কেবল এদিক সেদিক ঘুরে যাবেন, কাঙ্ক্ষিত নির্বাচনের ফলাফল যাবে নারায়ণগঞ্জবাসী আস্থার মানুষের কাছেই।