প্রিন্ট নারায়ণগঞ্জঃ বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি রাষ্ট্র ও সমাজে জীবনের উপর ব্যক্তির অধিকার, আইনের আশ্রয় পাওয়ার অধিকার ও সর্বোপরি আইনের শাসন নিশ্চিত করতে ১৭ আগস্টের “সন্ত্রাস বিরোধী দিবসে ” সকল প্রকার বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড বন্ধ ও সন্ত্রাসীদের গডফাদারদের বিচারের আওতায় আনার দাবিতে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দৃঢ় আওয়াজ তোলার আহ্বান জানিয়ে এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ১৭ আগষ্ট (মঙ্গলবার) সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি কমরেড হাফিজুর রহমান এর সভাপতিত্বে এবং জেলা পার্টির অন্যতম সদস্য কমরেড গোলাম মোস্তফা সাচ্ এর সঞ্চালনায় সভায় অন্যানদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা ১৪ দলের অন্যতম নেতা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটির সহ সাধারণত সম্পাদক জি এম আরমান, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর এর সাবেক সাধারণত সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জহিরুল ইসলাম, পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম নেতা ও জেলা কমিটির বিপ্লবী সাধারণ সম্পাদক কমরেড হিমাংশু সাহা, শ্রমিক জাগরণ মঞ্চের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রমিকনেতা জাহাঙ্গীর আলম গোলক, আওয়ামী লীগের মহানগর কমিটির সদস্য সুমন, বাংলাদেশ যুব মৈত্রীর জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক যুবনেতা মাঈন উদ্দিন বারী, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি ও জেলা কমিটির সভাপতি বিপ্লবীনেত্রী জেসমিন আক্তার, পার্টির সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটির সদস্য কমরেড মোঃ মাসুম আহমেদ, আনোয়ার হোসেন আনু প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, ১৯৯২ সালের এই দিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে অজ্ঞাত দুষ্কৃতীকারী সন্ত্রাসীদের হাতে গুলীবিদ্ধ হয়েছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সভাপতি কমরেড রাশেদ খান মেনন এমপি। ঐ হত্যাপ্রচেষ্টার ২৯ বছর পার হয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত তার বিচার হয়নি। বিএনপি সরকার ও তার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দলমত নির্বিশেষে প্রতিবাদ – প্রতিরোধের প্রেক্ষিতে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আততায়ীদের ও তার পিছন পর্দার ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করে বিচারে প্রতিশ্রুতি দিলেও একটা নামকায়াস্তে তদন্তের মাধ্যমে কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে চার্জশীট করলেও তার ঐ শাসনামলে ও পরবর্তীতেও তাদের কথিত ঐ বিচার হয়নি। ঐ সময়কালেই দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাসমূহে অব্যাহত সন্ত্রাসী, হত্যা-হামলার ঘটনার ধারাবাহিকতায় চুয়াডাঙ্গার ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা রমজান, মকলেস, সোহরাব, কুলবিলা গুচ্ছগ্রামের উজীর, মুরাদ, আাসানুর, শমসের, আখের আলী, কাওসার, পুটু, নাসির নামের আটজন ভূমিহীন খেতমজুর নেতা, মেহেরপুরের জহির, ঝিনাইদহের মন্টু মাস্টারসহ যারা প্রাণ দিয়েছিলেন তাদের হত্যাকান্ডের বিচার হয়নি। বিচার হয়নি ২০০১ সালে চারদলীয় শাসনামলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পার্টির সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য কমরেড রফিক খান হত্যার। বহু চেষ্টার পর নাটোরের লালপুর আখচাষী নেতা সালামের হত্যার বিচারকার্য সম্পন্ন করা গেলেও ঐ হত্যার পিছনের ষড়যন্ত্রকারীরা অধরাই রয়ে গেছে। বরং ঐ সন্ত্রাসীদের গডফাদাররা রাজনীতি ও সমাজে প্রতিষ্ঠিত এবং অবাধে বিচরণ করছে।
বক্তারা আরো বলেন, এই ভাবে যদি বিচারহীনতার সংস্কৃতির চর্চা অব্যাহত থাকে তাহলে দেশকে সোনার বাংলার প্রকৃত রুপে দেখার পরিবর্তে সাম্প্রদায়িক এবং মৌলবাদকে আরো বেশি মাত্রায় প্রশ্রয় দেয়া হবে ; যা বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক রাস্ট্র গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়নে চরম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে বলে মনে করা হয়। সকল হত্যার প্রকৃত বিচার দাবির পাশাপাশি বিশুদ্ধ সংস্কৃতি চর্চার অন্যতম মাধ্যম এবং প্রধানমন্ত্রীর খেলার মাঠ – জলাশয় রক্ষার নির্দেশনা বাস্তবায়নে সম্মান প্রদর্শন করে অনতিবিলম্বে নারায়ণগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ (ভোকেশনাল) খেলার মাঠ ঠিক রেখে নব ভবনের নির্মাণ কাজ স্থানান্তরিত করার জন্যও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানানো হয়।