নিজস্ব সংবাদদাতা: নারায়ণগঞ্জে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ ও শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধ, শিক্ষাক্রম ২০২০ বাতিল করার দাবীতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার আয়োজনে এক প্রতিবাদী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) সকালে নগরীর চাষাড়াস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ প্রতিবাদী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত প্রতিবাদী মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ বলেন- ‘টাকা যার শিক্ষা তার‘ এই নীতির ভিত্তিতে আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালিত হয়। আমাদের দেশের শাসকগোষ্ঠী শিক্ষা ব্যবস্থা মূল ভিত্তি করে রেখেছে বাণিজ্যিকীকরণ। যার টাকা আছে সেই শিক্ষা পাবে, যার টাকা নেই সে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে। নারায়ণগঞ্জ হলো বাংলাদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে সবচেয়ে ধনী জেলা। অথচ সেখানে শিক্ষার্থীদের জন্য দেহ মনে বিকশিত হওয়ার জন্য শিক্ষা নিয়ে কোন ধরনের আয়োজন নেই। এখানে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। কিন্তু এখানে কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়নি। ফলে অনেক শিক্ষার্থী অন্যান্য জেলায় শিক্ষা গ্রহণ করতে যায়। আবার অর্থনৈতিক সংকটের কারণে শিক্ষার্থীরা ঝরে পরে। একজন শিক্ষার্থী যাতে একটা নির্দিষ্ট স্তর পর্যন্ত সামগ্রিকতায় জ্ঞান লাভ করে। সেই কথা বলে শিক্ষাক্রম ২০২০ এ ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত একই বিভাগের কথা বলা হয়েছে। পূর্বে যেভাবে ৯ম শ্রেণীতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসা শিক্ষা এই ৩ বিভাগে ভাগ করা হতো। এখন এই বিভাগ চলে যাচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক থেকে। তবে এতে বিজ্ঞান শিক্ষার পরিসর কমে এক তৃতীয়াংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর বদলে সেখানে যুক্ত করা হচ্ছে ধর্ম শিক্ষা, জীবন ও জীবিকা এরকম নতুন কিছু বিষয়। ফলে বইয়ের বোঝা বাড়লেও জ্ঞান ও দক্ষতা উঠার সম্ভাবনা ক্ষীণ। অল্প বিজ্ঞান পড়ে মাধ্যমিক শেষ করে উচ্চ মাধ্যমিকে গিয়ে হঠাৎ বিজ্ঞান বিভাগের পরিসর বেড়ে গেলে শিক্ষার্থীরা চাপের মুখে পড়বে। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরী বোর্ড মিলিয়ে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবার মোট পরিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২ লাখ ৩ হাজার ৪০৭ জন, যা গতবার ছিল প্রায় ১৪ লাখ। গতবারের চেয়ে এবার ১ লাখ ৯৬ হাজার ২৮৩ জন পরিক্ষার্থী কমেছে।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি মুন্নি সরদার’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহম্মেদ রাতুল’র সঞ্চালনায় ও-ই প্রতিবাদী মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- জেলার অর্থ সম্পাদক নাছিমা সরদার, নারায়ণগঞ্জ কলেজ শাখার সংগঠক তামান্না বিনতে কথা।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন- দীর্ঘ সময় ধরে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে শিক্ষা উপকরণের দামও বেড়েছে অনেক। এতে জনসাধারণ ও শিক্ষার্থীদের জীবন নাভিশ্বাস হয়ে উঁঠেছে। তার মধ্যে ডিজেলের দাম বাড়ানোয় পরিবহন ভাড়াও অনেক বেড়েছে। যার কারণে গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। অন্যদিকে গতকাল রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হাবিবুর রহমান হলের ৩য় তলা থেকে পরে গুরুতর আহত হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাকের্টিং বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তাকে রাজশাহী মেডিকেলে নেওয়া হলে চিকিৎসার অবহেলায় মৃত্যু হয়। যখন শিক্ষার্থীরা মেডিকেলের সামনে শাহরিয়ারের মৃত্যুর প্রতিবাদে আন্দোলন করে, তখন ইর্ন্টানীর ডাক্তারা শিক্ষার্তীদের উপর আক্রমন চালায়।
শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধ, স্বাস্থ্য খাতের উন্নতি, শিক্ষাক্রম ২০২০ বাতিল ও নারায়ণগঞ্জে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করার জোড় দাবী জানান নেতৃবৃন্দ।