অনলাইন ডেস্ক :নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আলিরটেকে জোরপূর্বক অন্যের জমির মাটি কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক মেম্বারের বিরুদ্ধে। আদালতে মামলা থাকার পরও স্থানীয় চেয়ারম্যানের আস্থাভাজন হওয়ায় এই জবর দখল করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগি মো. ইব্রাহিম সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সোমবার (১৩ মার্চ) সদর থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
অভিযুক্তরা হলেন- মুকবিল খলিল (৬০), আলীরটেক ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড মেম্বার রওশন (৫০), জয়নাল বেপারী (৭০), সেলিম (৪৫), মনির হোসেন (৩৬), চাঁন মিয়া (৬০), আমান (৫৫), জাকির (৫০), লাল মিয়া (৪৮) সহ অজ্ঞাত ৩-৪ জন।
ভুক্তভোগি ইব্রাহীম অভিযোগে জানান, তারা একদল ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসী। তারা বহুদিন অত্র এলাকায় জমি ক্রয়-বিক্রয় ও দখলবাজীসহ দালালিসহ অন্যের জমি দখল করে মাটি কেটে বিক্রি করার কাজে লিপ্ত। তারা ইতোমধ্যে বহুজনের জমি জালজালিয়াতি করে উচ্ছেদও করে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনী আমার পিতা, মাতা ও বড় ভাইকে গুলি করে হত্যা করে। ছোট বেলায় এতিম হয়ে যাই। আমি ভূমিতে শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করে আসছি। আমার দাবীকৃত নালিশা তফসিল বর্নিত ভূমিতে বিবাদীদের কোন স্বত্ব, স্বার্থ ও দখল নাই। কিন্তু উপরোক্ত বিবাদীগন বিগত ৫-৬ বছর ধরে বেশ কয়েক বার আমার নিম্ন তফসিল বর্নিত ভূমি দখল করার পাঁয়তারা করিতেছে।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, পরবর্তীতে ২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি উপরোক্ত বিবাদীগন আমার নিম্ন তফসিল বর্ণিত ভূমিতে অনাধিকার জোরপূর্বক বে-আইনী ভাবে মাটি কাটা শুরু করে। উপরোক্ত বিবাদীগনরা আমার প্রায় ৭ কোটি টাকার মাটি কেটে নিয়ে যায়। এখনো তারা কাটা বন্ধ করে নাই। উক্ত বিষয়ের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ অতিঃ জেলা ম্যাজিট্রেট আদালত নারায়ণগঞ্জ-এ ১৫৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করি। যার পিটিশন নং- ২৭৫/২০১৩। মামলায় আমি রায় পেলেও বিবাদীগণ বিজ্ঞ আদালতের রায় অমান্য করে তাদের অবৈধ মাটি কাটা চলমান রাখে।
তিনি আরও জানান, চলতি বছরের ৯ মার্চ দুপুরে তাদের মাটি কাটা বন্ধ করার অনুরোধ করলে রোসেন মেম্বার আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং ভবিষ্যতে বড়রাবারড় করলে প্রাণে মেরে লাশ মাটিতে পুঁতে ফেলার হুমকি দেন।
ভুক্তভোগী মো. ইব্রাহিম জানান, এর আগেও এ বিষয়ে অভিযোগ দেয়ার পরও পুলিশ এখন পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। একদিকে জমি দখল করা হচ্ছে অপরদিকে আমরা পরিবারের সদস্যরা জীবন শঙ্কায় আছি।
নারায়ণগঞ্জ সদর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান জানান, এরকম একটি অভিযোগ হয়েছে। অন্য একটি মামলার আসামী ধরার জন্য আমি নওগাঁ যাচ্ছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে রওশন মেম্বার তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটি মিথ্যা বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ওই জায়গা ইব্রাহীমদের না। সেটি তাদের বাপ-দাদার সম্পত্তি। তারা নিজেদের জমির মাটি নিজেরা কাটছেন।