প্রিন্ট নারায়ণগঞ্জ: আড়াইহাজারে দিন মজুর সাদু মিয়ার স্ত্রী আমেনা খাতুন (৪১) যাকাতের টাকা আনতে গিয়ে ১৫ হাজার টাকা চুরির অপবাদে মারধরের শিকার হওয়ার দুঃখ সইতে না পেরে কিটনাশক (কেরির বড়ি) খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে ।
ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে, গত ১৩ এপ্রিল একই এলাকার ওষুধ ব্যবসায়ী আল আমিনের বাড়িতে যাকাতের টাকার জন্য যায় আমেনা খাতুন। আল আমিনের মা হাওয়া বেগম (৬৪) আমেনা খাতুনকে ৪০টাকা দিয়ে বিদায় করে দেন।
এর তিন দিন পর আমেনা খাতুনকে তার বাড়ী থেকে ডেকে আনেন হাওয়া বেগম। এ সময় হাওয়া বেগম ও তার বড় ছেলে আল-আমিন আমেনাকে তাদের বাড়ি থেকে ১৫হাজার টাকা চুরি হয়েছে এবং ওই টাকা আমেনা খাতুন চুরি করেছে বলে অপবাদ দিয়ে তাকে মারপিট করে।
ঘটনার খবর পেয়ে আমেনার স্বামী সাদু মিয়া আল আমিনের বাসায় গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেলে বিচার করা হবে বলে স্ত্রীকে ছাড়িয়ে আনেন।
ঘটনার দিন (বৃহষ্পতিবার বিকেলে) এ নিয়ে আল আমিন এলাকার লোকজন জড়ো করে আমেনাকে উপস্থিত করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আমেনা এলাকাবাসীর সামনে শপথ করে জানায় যে সে চুরি করেনি, এমন কি সে চুরির ঘটনার ব্যাপারে কিছু জানেন না।
কিন্তু আল আমিন ও তার মা আমেনার কথা কিছুতেই বিশ্বাস না করে চোর আখ্যা দিয়ে অপমান অপদস্ত করে। চুরি না করেও চুরি করার মিথ্যা অপবাদ সহ্য করতে না পেরে আমেনা তার নিজ ঘরে গিয়ে কিটনাশক (কেরির বড়ি) খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমেনার সন্তানেরা বিষয়টি বুঝতে পেরে আশেপাশের লোকজন কে ডাকাডাকি করে জড়ো করে।
তারা আমেনাকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। তার অবস্থা আশংকাজনক দেখে হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ঢাকা যাওয়ার পথে আমেনার মৃত্যু হয়।
তবে অভিযুক্ত আল আমিন এই ঘটনা অস্বীকার করেন। এলাকাবাসীর দাবি তদন্ত করলে অনেক কিছু বের হয়ে আসতে পারে।
এদিকে ঢাকা থেকে লাশ ফেরত নিয়ে আসলে এলাকাবাসী ও আত্নীয়স্বজনরা আড়াইহাজার থানায় খবর দিলে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নূর এ আলম ঘটনা স্থলে গিয়ে ঘটনার ব্যাপারে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলেন এবং লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করেন।