নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুমের ভূমিদস্যুতার বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে স্থানীয় এলাকাবাসী। একটি শিল্পগ্রুপের পক্ষ হয়ে চেয়ারম্যান মাসুম ভাড়াটে সন্ত্রাসীর ভূমিকায় উপনীত হয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। সাধারণ মানুষের ফসলি জমি জোরপূর্বক ভরাট করার অভিযোগ করেছেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
বুধবার (৩ মে) সকালে সোনারগাঁয়ের পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের কান্দারগাঁও গ্রামে মেঘনা গ্রুপের পক্ষে অবৈধভাবে জমি দখলের অভিযোগ এনে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুমের বিরুদ্ধে কান্দারগাঁও, জৈনপুর, ভবনাথপুর ও ছয়হিস্যার এলাকাবাসীরা মানববন্ধন করেন।
এসময় নারীরা ঝাড়ু হাতে মাসুম চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। এসময় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ‘সন্ত্রাসীদের কালো হাত ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘মাসুম চেয়ারম্যানের বিচার চাই, ফাঁসি চাই’সহ নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জমির মালিক মোতালিব মিয়া, শুক্কুর আলী কমান্ডার প্রমুখ। এসময় উপস্থিত ছিলেন পিরোজপুর ইউনিয়নের আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি জাকির হোসেনসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান মাসুম একজন সন্ত্রাসী ভূমিদস্যু। সে বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী পালন করে। তাদের ভূমিদস্যুতার প্রতিবাদ করতে গেলে মাসুম চেয়ারম্যানের পালিত সন্ত্রাসীরা সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে প্রবেশ করে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এর আগেও মাসুম চেয়ারম্যানের বাহিনীর বিরুদ্ধে বেশ কিছু হত্যাকা-ের অভিযোগ রয়েছে। তবে ভয়ে তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না। স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মী থেকে শুরু করে প্রশাসনকেও অবৈধ পয়সা দিয়ে কিনে রেখেছে মাসুম চেয়ারম্যান। কোথাও বিচার দিয়েও সাধারণ মানুষ ন্যায় বিচার পায় না। ভূমিদস্যুরা প্রথমে চকের বা বিলের কিছু জমি কিনে তারপর ভেকু দিয়ে কেটে পুরো এলাকা মাটি দিয়ে বাঁধ দেয়। এরপর ড্রেজার লাগিয়ে ওই জমি ভরাট করে। ভুক্তভোগীরা তাদের জমির কাছে যেতে গেলে মারধর করতে আসে এবং নানা ধরনের হুমকি দেয়। বালু দিয়ে ভরাটের কারণে তখন অনেকেই তার জমি কোথায় ছিল সেটা বুঝতে পারে না। তখন অনেকেই বাধ্য হয়ে কম দামে তাদের জমি বিক্রি করতে বাধ্য হন। ভূমিদস্যুদের কারণে সোনারগাঁয়ে ফসলি জমি দিন দিন কমছে। যারা পূর্বে কৃষিকাজ করতেন তাদের এখন পেশা বদলাতে হচ্ছে। অনেকেই বর্তমানে সহায় সম্বলহীন নিঃস্ব হওয়ার পথে।
বর্তমানে সন্ত্রাসী ভূমিদস্যু মাসুম চেয়ারম্যান মেঘনা গ্রুপের পক্ষ হয়ে ভূমিদস্যুতায় লিপ্ত বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। পুরো এলাকাটি ড্রেজার দিয়ে ভরাটের পরে সেই জায়গা মেঘনা গ্রুপকে মাসুম চেয়ারম্যান বুঝিয়ে দিবে বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন।
মানববন্ধনে আরও অভিযোগে জানানো হয়, ভূমিদস্যু মাসুম চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে বালু ভরাটে বাধা দেয়ায় একাধিক যুবককে হত্যা করা হয়। সেসব ঘটনার বিচার আজও হয়নি।