প্রিন্ট নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার ও জেলা কৃষক লীগের সাবেক সহসভাপতি আলোচিত-সমালোচিত দৌলত হোসেন মেম্বার হত্যা মামলার প্রধান আসামী গোগনগর ইউপির ৮নং ওয়ার্ড মেম্বার রুবেলসহ ১৬ আসামীর এক দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (১৫ মে) সকালে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আলমের আদালতে আসামীদের হাজির করে জামিন আবেদন করা হয়। একই সঙ্গে রিমান্ড শুনানী হয়। আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আসামীদের জামিন নামঞ্জুর করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আসামীদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরআগে দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর গত ৯ মে আসামীরা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন। আদালত জামিন না মঞ্জুর করে আসামীদের কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
এদিকে রিমান্ড মঞ্জুরের পর আসামীদের প্রিজনভ্যানে তোলার সময় গণমাধ্যমকর্মীরা আসামীদের ছবি তুলতে গেলে আসামীরা হাত দিয়ে এবং তাদের সহকর্মীরা ছাতা দিয়ে আড়াল করে। ফলে সব আসামীদের ছবি তোলা সম্ভব হয়নি ফটো সাংবাদিকদের।
আসামীদের ছবি তুলতে গেলে হাত ও ছাতা দিয়ে বাধা
নারায়ণগঞ্জ আদালতের পুলিশ পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, দৌলত মেম্বার হত্যা মামলার ১৬ আসামীকে আদালতে হাজির জামিন প্রার্থনা করা হয়। আদালত শুনানী শেষে জামিন না মঞ্জুর করেন। একই সময় রিমান্ড শুনানী হয়। এবং শুনানী শেষে আদালত প্রত্যেক আসামীর একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছন।
প্রসঙ্গত: গত বছরের ২৬ জুলাই দৌলত হোসেন মেম্বার রাত ঔষধ ক্রয়ের জন্য বাসা থেকে বের হলে পুরাতন সৈয়দপুর ৩য় শীতলক্ষ্যা সেতুর সামনে সিএনজি দিয়ে পৌছামাত্রই মেম্বার রুবেলসহ এজাহারনামীয় আসামীসহ অজ্ঞাত আরো প্রায় ১০/১৫ জন পুর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দৌলত মেম্বারকে সিএনজি থেকে নামিয়ে রামদা দিয়ে তার মাথায় কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এবং শীতলক্ষ্যা ব্রীজের ঢালে রক্ষিত পাথর দিয়ে দৌলত হোসেন মেম্বারের হাত-পা ভেঙ্গে গুড়ো করে ফেলা হয়। এ সময় দৌলত মেম্বারের পায়ের রগ কেটে এবং পা কেটে গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম করার পর চরসৈয়দপুর এলাকায় সিএনজি পাম্পের সামনে তার মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে মামলার আসামীরা। পরবর্তীতে লোক মারফত দৌলত হোসেন মেম্বারের পরিবারের সদস্যরা জানতে পেরে প্রথমে তাকে মুন্সিগঞ্জ সদর হাসপাতালে এবং অবস্থা বেগতিক দেখে পরবর্তীতে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
গত ৯ মে আসামীরা আদালতে আত্মসমর্পন করে
এ ঘটনার একদিন পর নিহত দৌলত হোসেন মেম্বারের স্ত্রী মমতাজ বেগম গোগনগর ইউপি সদস্য রুবেলকে প্রধান আসামী করে এবং ইমরান, রানা, হিমেল, শাওন, আমির, হিমু, ফাহাদ, তাওলাদ হোসেন, আমির হোসেন, রিহান, হাবিব, সাদ্দাম, শুভ, আবুল কাশেম, মাসুদ, লুৎফর, নাজির, রাসেলসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরো ১৫ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা নং ৩০। মামলা দায়ের পর সেলিম নামে এক আসামীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও বাকী সকল আসামী দীর্ঘদিন ১০ মাস পলাতক থাকার পর ৯ মে আদালতে আত্মসমর্পন করলে আদালত আসামীদেরকে জেলহাজতে প্রেরন করেন।