নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাড. হাসান ফেরদৌস জুয়েলের বিরুদ্ধে নালিশি পৈত্রিক সম্পত্তি জবর দখল, ভাংচুরের অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
মঙ্গলবার (২৬শে ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে তিনটায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন এ অভিযোগ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী বলেন, আমি জোছনা আমার স্বামী মোঃ রোমেন, পিতা মৃত চাঁন মিয়া, মাতা- মৃত মাসুদা বেগম, সাং- ২০৪ কলেজ রোড, গলাচিপা, থানা – ফতুল্লা, জেলা – নারায়ণগঞ্জ। মৌজা – মাসদাইর, দাগ নং – ১০৪৮ ও ১০৫০, জমির পরিমাণ সাড়ে ৬ শতাংশ, সেখানে ২টি বিল্ডিং স্থাপনা রয়েছে। ১টি দোতলা ২ ইউনিটের ফ্ল্যাট, আরেকটি দ্বিতীয় তলা ভবন। আমার স্বামীর পৈত্রিক সম্পত্তির ২ ইউনিটের সামনের বিল্ডিং এর ২ রুমের ছোট্ট ১টি ফ্ল্যাটে থাকি।
তিনি বলেন, গত ২৯ নভেম্বর আমার বড় ভাসুর চঞ্চল এবং রুবেল বেশ কিছু লোক নিয়ে আমার বাড়িতে হামলা চালায় এবং ভাংচুর করে টাকা-পয়সা, স্বর্ণ-অলংকার, লুট-পাট করে নিয়ে যায়। আজকে আমার যে অসহায় অবস্থা আমি এ বিষয় নিয়ে আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই। যে কারনে আজকে আপনাদের স্মরনাপন্ন হয়েছি। বিগত ২০০৯ সালে পছন্দ করে বিয়ে করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয় রোমেনের গোটা পরিবারের অর্ন্তদ্বন্ধ। আমরা বিয়ে করে দীর্ঘ দিন অন্যত্র ভাড়ায় থাকি, এরই মধ্যে মারা যান আমার শ্বশুড় ও শ্বাশুড়ী। ২০১৯ সালে আমরা বাড়িতে উঠি কিন্তু তখন বিপত্তি বাধে আমার ভাসুর, ননাস, দেবরের সাথে তারা প্রকাশ্য রূপ ধারন করে এবং মার মুখি আচরন অব্যাহত থাকে। একসময় আমার বড় ভাসুর চঞ্চল মাহবুব এবং রুবেলের নেতৃত্বে গভীর ষড়যন্ত্র, মারধর, অত্যাচার, অমানবিক আচরন এবং বিভিন্ন অপকৌশলের চলমান ধারায় তারা গোপনে বাড়ি বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয় এবং আমরা এ ষড়যন্ত্র জানতে পেরে বিজ্ঞ আদালতে একটি দেওয়ানী মোকদ্দমা দায়ের করি, যার মামলা নং – ১১২/২০।
তিনি আরও বলেন, আমার উকিলের নাম এ্যাড. দবির উদ্দিন, বিবাদী পক্ষের উকলের নাম এ্যাড. হাসান ফেরদৌস জুয়েল। মামলাটিতে আমি প্রাথমিক ডিগ্রি পাই কিন্তু বিজ্ঞ কমিশনার আসাদুজ্জামান লিটন আমাকে যে ভাবে ভাগ করে দেন সে ভাবে থাকার উপযোগী নয় বলে আমি উচ্চ আদালতে রিভিশন মামলা করি এবং সেখানেও আমি আমার পক্ষে রায় পাই যেন আমাকে লপ্ত দখল বুঝিয়ে দিয়ে ভাগ করা হয় কিন্তু আসাদুজ্জামান লিটন এড. হাসান ফেরদৌস জুয়েলের সংগ নিয়ে আবারো আমাকে ৬ ফিট পাশ ৬৬ ফিট লম্বা-লম্বি ভাবে ভাগ করে দেয়। গত ২৭ আগষ্ট কমিশনার রিপোর্ট দাখিল করেন যা আমি জানিনা, আমি গত ৭ সেপ্টেম্বর আপত্তি দাখিল করি। ৮ অক্টোবর চূড়ান্ত ডিগ্রি দিন ধার্য হলো এবং এটার বিরুদ্ধে ৩১ অক্টোবর আবারো উচ্চ আদালতে আপিল করি। আপিল মামলা নং – ৩২৮/২০২৩ইং। গত ৫ নভেম্বের একটি তারিখ যায়, ৮ নভেম্বর একটি তারিখ যায়, ২৩ নভেম্বর আরেকটি তারিখ যায়। পরে ২৬ নভেম্বর অর্ধেক হেয়ারিং হয়। বাকি অর্ধেক ২০২৪ সালের ৯ জানুয়ারী তারিখ ফেলে। বিনা নোটিশে গত ২৯ নভেম্বর তারিখে আমার বাড়িটি ভাংচুর করে। আমি দৌঁড়ে কোর্টে যাই এবং আমার উকিল কে জিজ্ঞেস করি কেন আমার বাড়ি ভাংচুর করছে। উকিল আমাকে বলে বেআইনি ভাবে ভাংচুর করছে। আমি কান্না করিয়া বল্লাম এই অফুরন্ত ক্ষতি আমি কি দিয়ে শেষ করবো, বলে চলে আসলাম। এসে জানতে পারলাম যিনি আমাকে ম্যাজিষ্ট্রেট পরিচয় দিয়েছে আসলে সে ম্যাজিস্ট্রেট নয়, সে হচ্ছে একজন নাজির। বেলা ৪টার পরে গিয়ে দেখি আমার সাড়ে ৮ ভরি স্বর্ণের গহণা এবং ২০০ টাকা কম দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা নেই এবং আরো অনেক মূল্যবান জিনিসপত্র উধাও। বাড়ির মিটার ও পানির মটর সহ খুলে নিয়ে গেছে। রাতে আমার মালামাল সরাবো সেখানে এড. হাসান ফেরদৌস জুয়েল কিছু সন্ত্রাসী লোকজন নিয়ে এসে গেইটে তালা দিয়ে দেয়। আর বলে আমি বাড়ি কিনে নিয়েছি কিন্তু কোন প্রমান চাইলে দেখাতে পারেন নি এবং বলে তোমাদের দেখাবো কেন ? আমার কথা হলো যে একজন উকিল তার কাছ থেকে আমরা ন্যায্য পাওনা বুঝে নিবো আর সেই যদি সাধারন মানুষের হক সুযোগ বুঝে কেড়ে নিতে আসে তাহলে সাধারন মানুষ কোন আইনের কাছে দাঁড়াবে। আইনের লোকের প্রতি কি আস্থা থাকবে, আইনের লোকের দ্বারা আমি অন্যায় ও অমানবিক ভাবে অত্যাচারিত ও আশ্রয়চ্যুত।
তিনি আরও বলেন, আমি আজকে এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিনি ছাড়া বর্তমানে এই অসহায় অবস্থা থেকে আমাকে এবং আমার অসহায় পরিবারকে উত্তরনে আর কেউ নেই। তার সু-দৃষ্টি এবং কঠোর নির্দেশনা থাকলে আমার নারায়ণগঞ্জের গণ মানুষের নেতা নারায়ণগঞ্জ – ৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব এ.কে.এম. শামীম ওসমান এবং ৫-আসনের এম.পি আলহাজ্ব এ.কে.এম. সেলিম ওসমান যারা আমাদের অভিভাবাক তাদের সহানুভূতিতে আমি পেতে পারি ন্যয় বিচার, ফিরে পেতে পারি আমার বসত ভিটা এবং অন্যান্য ক্ষতিপূরণ। আমি বিশ্বাস রাখি আপনারা সমাজের বিবেক, মানবতার দর্পন। সাংবাদিকরা আমার এই বক্তব্য সমূহ গণ মাধ্যমে প্রকাশ করে তাদের নজরে আমার অসহায়ত্বের বাস্তব চিত্র তুলে ধরলে ইনশাআল্লাহ প্রতিকার পাবই পাবো এবং দেশের অপামর জনতাকে স্বাক্ষী রেখে আমার রাষ্ট্র নায়ক ও আমার অভিভাবকদের কাছে বিচার প্রার্থী হলাম। আর আমার একটি মূল্যবান কথা হলো আইনের লোকের দ্বারা মানুষ সাহায্যে পাবে তারা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবে, তারা রক্ষক হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়াবে। এখন রক্ষক যদি ভক্ষক হয় তাহলে দেশ কিভাবে চলবে। দেশে অন্যায়, ভ্যাবিচার, এদের কারনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশ থেকে দেশের আইনের থেকে এদেশের মানুষের বিশ্বাস এইসব বেশধারী রক্ষকদের কারনে উঠে যাচ্ছে। বদনাম হচ্ছে আমার দেশের, বদনাম হচ্ছে আমার নেত্রীর, বদনাম হচ্ছে আমার নেতার, আদৌ কি তারা জানে আমার নেতা এবং নেত্রী। তাই আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন সহ আমার পরিবারের নিরাপত্তা পূর্বের ন্যয় যেন বাড়িতে বসবাস করিতে পারি। সরকারের এবং উপরস্থ কর্মকর্তাদের আইনত যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার সু-মর্জি হয়।