প্রিন্ট নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে উচ্ছেদ-পরবর্তী দখল রোধে নদীর তীরে ওয়াকওয়ে নির্মাণ ও বনায়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয় ২০১১ সালে। নদীর পাড়ের সৌন্দর্যবর্ধনে নদীর তীরে নির্মাণাধীন প্রায় কয়েক কিলোমিটার ওয়াকওয়েতে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপন করা হয় তখন। কিন্তু সেই ওয়াকওয়ে ও নদীর তীর রক্ষার ভিত্তি হিসেবে যেই পাথর স্থাপন করা হয়েছিল সেই নদীর পাড়ের পাথর খনন করে তা চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহলের বিরুদ্ধে।
অনেকটা প্রকাশ্যে পাথর চুরির উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর মধ্যে খোভ বিরাজ করছে।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার গোগনগর ইউনিয়নের চর সৈয়দপুর এলাকায় নব নির্মিত বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমান সেতু সংলগ্ন নদীর পশ্চিম পাড় এলাকায় খননযন্ত্র দিয়ে প্রতিনিয়ত পাথর উত্তোলন করে আসছে একটি মহল।
এলাকাবাসীর অভিযোগ গোগনগর ইউনিয়ন এর ৮ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য রুবেল মেম্বারের নেতৃত্বে ৭ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর মেম্বার ও ৬ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য হাবু মেম্বার সহ একটি ব্যাক্তিমহল নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর বিআইডাব্লিউটিএ এর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্টতায় নাসিম ওসমান সেতুর তলদেশের গোড়ার পাথর ও মাটি খনন করে তা বাল্কহেড বোঝাই করে অন্যত্র বিক্রি করে আসছে। এতে করে যেমনি শীতলক্ষ্যা নদীর পার ভাঙ্গনে হুমকির মুখে পড়ছে তেমনি সেই এলাকাবাসীর বহু কাঙ্খিত নবনীর্মিত বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমান সেতুর স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
গত ৩রা ফেব্রুয়ারী(শনিবার) পাথর চুরির উক্ত ঘটনাটি এলাকাবাসীর নজরে আসলে এলাকাবাসী বাধা প্রদান করে। যার ফলে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে দ্রুত পাথর খননের মেশিন ও বাল্কহেড সরিয়ে নিলেও ৪ঠা ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ পরদিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় পুনরায় তারা পাথর খননের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
জানা গেছে, পাথর খননকারী মহলটির নেতৃত্বে থাকা গোগনগর ৮ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য রুবেল মেম্বার ও তার বাহিনী চর সৈয়দপুর এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত প্রভাব খাটিয়ে জোড়পূর্বক ভোগদখল সহ নানা অপকর্ম করে আসছে। এছাড়াও তিনি গোগনগর ইউনিয়নের আলোচিত হত্যাকান্ড দৌলত হোসেন হত্যা মামলার এজাহার ভুক্ত প্রধান আসামি। দীর্ঘদিন উক্ত মামলায় জেল হাজতে থাকার পর জামিনে বের হয়ে এসে রুবেল মেম্বার নারায়ণগঞ্জ এর একটি রাজনৈতিক পরিবারের নাম ভাঙ্গীয়ে পুনরায় এলাকায় প্রভাব খাটিয়ে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দর বিআইডব্লিউটিএ এর উপ-পরিচালক মোবারক হোসেন মজুমদারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ের মাটি বা পাথর উত্তোলনের ঘটনাটি অবগত নন তিনি। এছাড়া তিনি বলেন নদীর পাড়ের ‘ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি হলেও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ছাড়া খোঁড়াখুঁড়ি করে পাথর উত্তোলন বিধিসম্মত নয়। নদীর অস্তিত্ব ও পাড় রক্ষার স্বার্থে তিনি এ ব্যাপারে সরেজমিন পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান।