প্রিন্ট নারায়ণগঞ্জঃ ছাত্র-জনতা হত্যার একাধিক মামলা থাকলেও নারায়ণগঞ্জের গোগনগর ইউনিয়নের সৈয়দপুর এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টিকারী কাশেম সম্রাট, ফয়সাল ও রানা আহাম্মদকে ধরছে না সদর মডেল থানা পুুলিশ। বরং পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) রাত ৭টার দিকে গোগনগর ইউনিয়নের সৈয়দপুরে শীতলক্ষ্যা সেতুর সামনে সড়কে আওয়ামী লীগের পক্ষে বিক্ষোভ মিছিল করেছে কাশেম, ফয়সাল, রানা ও তাদের অনুগামীরা। এতে করে জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
জানা গেছে, বিগত দিনেও হত্যাসহ অসংখ্য মামলার আসামী ছিল নারায়ণগঞ্জের গোগনগর ইউনিয়নের সৈয়দপুর এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টিকারী কাশেম সম্রাট, ফয়সাল ও রানা আহাম্মদ এবং তাদের বাহিনীর লোকজন। গোগনগরের আলোচিত দৌলত মেম্বারের পুত্র সদর থানা কৃষক লীগের সভাপতি কাশেম সম্রাটের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ সদর, ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ১৯টি মামলা রয়েছে। সদর থানা কৃষক লীগের সহসভাপতি ফয়সালের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ সদর, ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ১৬টি মামলা রয়েছে। সদর থানা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক রানার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ সদর, ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ১৪টি মামলা রয়েছে।
২০১৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জসিম হত্যা মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন কাশেম সম্রাট। দৌলত মেম্বারের দুই পুত্র কাশেম সম্রাট ও ফয়সাল হচ্ছে চর সৈয়দপুরের মানুষের কাছে এক আতঙ্কের নাম। সৈয়দপুর এলাকার আব্দুল জলিলের পুত্র রানাও দীর্ঘদিন ধরে তাদের সঙ্গে যুগপৎভাবে সন্ত্রাসী কার্যকলাপে নিয়োজিত। তাদের বাহিনীর আরও সদস্যদের মধ্যে রয়েছে সৈয়দপুর এলাকার বাবু, সোহেল, মুহসিন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতা হত্যার অভিযোগে দায়েরকৃত ৫টি মামলার এজাহারনামীয় আসামী হলো কাশেম সম্রাট, ফয়সাল ও রানা আহাম্মদ।
জানা গেছে, বিগত দিনে নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে কাশেম সম্রাট, ফয়সাল ও রানা বাহিনী সন্ত্রাসীদের গডফাদার শামীম ওসমান ও তার পুত্র অয়ন ওসমানের ছত্রছায়ায় বাগিয়ে নিয়েছিল নারায়ণগঞ্জ সদর থানা কৃষক লীগের কমিটি। গত জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালেও গডফাদার শামীম ওসমানের সঙ্গে উপস্থিত থেকে ছাত্র জনতার উপর গুলিবর্ষণের ভিডিও ফুটেজেও স্পষ্ট দেখা গেছে কাশেম সম্রাট, ফয়সাল ও রানাকে। তাদের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে একাধিক হত্যা মামলা হলেও অদ্যাবধি অধরাই রয়ে গেছে কাশেম সম্রাট, ফয়সাল ও রানা এবং তাদের বাহিনীর লোকজন। বরং প্রশাসনের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে নির্বিঘ্নে সৈয়দপুর এলাকায় অবস্থান করে নীরবে চাঁদাবাজি করে আসছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে দাবি করে গোগনগরের সৈয়দপুরস্থ শীতলক্ষ্যা ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলও করেছে কাশেম, ফয়সাল ও রানা গং।
এদিকে বিগত দিনে ওসমান পরিবারের দোসর হয়েও বর্তমানে স্থানীয় সুবিধাভোগী কিছু বিএনপি নেতাদের ম্যানেজ করে কাশেম ফয়সাল ও রানা গং গোগনগরে অবস্থান করাসহ নানা অপকর্ম অব্যাহত রেখেছে। এছাড়াও বিগত দিনে পুলিশের সঙ্গে সখ্যতা থাকায় ও নিয়মিত মাসোহারা পাওয়ায় পুলিশও তাদেরকে ধরছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।